মুহাম্মদ রুকন উদ্দিন
১. ভূমিকা:
الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله..... وبعد
মহান
রাব্বুল আলামীনের অসংখ্য অনুগ্রহরাজীর অন্যতম একটি অনুগ্রহ হল, নবী-রাসুলগণের ধারা সমাপ্তির পর যুগে যুগে এমন
কিছু ব্যক্তিসত্ত্বার আবির্ভাব তিনি ঘটিয়েছেন যারা দেশ, জাতি ও পৃথিবীর কল্যাণে নিজেদেরকে ব্যাপৃত রেখেছেন সর্বোপরী
“ওরাছাতুল আম্বিয়া” এর উত্তম নমূনা হিসেবে নিজেদেরকে
প্রতিষ্ঠা করেছেন। ফলে সচেতন উত্তরসূরীদের স্নায়ুতে, স্মৃতিতে, চেতনায় ও ধারণায় তারা বিরাজ করেন নি:শব্দে।
আমাদের
দেশের জনসাধারণ ও জেনারেল শিক্ষিতদের একটি বদ্ধমূল ধারণা হলো, আল্লাহর অলী-বুজুর্গ ও ওলামায়ে কেরাম মসজিদ মাদরাসা
ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। দেশ-জাতি ও সমাজ গঠন বিশেষত ক্রমপরিবর্তনশীল
বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে তারা কোন চিন্তাই করেন না। অথচ এটি অত্যন্ত ভুল
একটি ধারণা। অলী-বুজুর্গ ও ওলামায়ে কেরাম ধর্মীয় ক্ষেত্রে যেমন অবদান রাখেন তেমনি অবদান
রাখেন দেশ, জাতি, ও বৈশ্বিক কল্যাণে। কিন্তু তাদের এ অবদানগুলোর বেশিরভাগ
লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে যায়।
মূলত
দুটি কারণে এটা হয়ে থাকে। প্রথমত বিচারের মানদণ্ডের ভিন্নতা। আমাদের জেনারেল
শিক্ষিতরা মানবরচিত জ্ঞানের মানদণ্ডে সবকিছু বিচার করে পক্ষান্তরে
ওলামায়ে কেরাম খোদাপ্রদত্ত জ্ঞান দ্বারা বিবেচনা করেন। দ্বিতীয় কারণ হল গবেষণা স্বল্পতা।
খোলাসা করে বলতে গেলে, তাদের জীবন, কর্ম সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণে লেখা-লেখি না হওয়া।
বাংলা ভাষায় লেখা-লেখি ও গবেষণার কলম বর্ণচোরাদের হাতে থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি
হয়েছে।
আশার
কথা হল এ পরিস্থিতি থেকে ধীরে ধীরে উত্তরণ ঘটছে। ওলামায়ে কেরামের জীবনী নিয়ে গবেষনা
শুরু হয়েছে। বলতে গেলে অত্যন্ত ইতিবাচক একটি দিক। সেই আলোকে জামেয়া দারুল মা‘আরিফ আল-ইসলামীয়ার
সাংস্কৃতিক ফোরাম আন-নাদী আস-সাক্বাফী আল-ইসলামীর বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতা ১৪৩৬ হি. উপলক্ষ্যে বাংলা প্রবন্ধের
বিষয় নির্ধারণ করেছে “আল্লামা সুলতান যওক নদভী : জীবন, কর্ম ও চিন্তাধারা”।
দীর্ঘ
বার বছর যাবত এই মহান মনীষীকে কাছ থেকে দেখছি। তাকে দেখে দেখে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু
শিখছি। ব্যক্তিগত ডায়রির বহু পাতায় স্থান পেয়েছে তার কথা। কিন্তু প্রবন্ধাকারে এই প্রথম
লিখেছি। কলেবরের সীমাবদ্ধতার কারণে তার জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ দিতে হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত করতে হয়েছে বিশদ আলোচনার দাবীদার বহু বিষয়কে। ফলে প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তার
ব্যক্তিসত্ত্বার মূল্যায়নে ঘাটতি রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে আল্লাহর তাওফীক শামেলে হাল হলে
ভবিষ্যতে প্রচেষ্টা চালানোর আশায় থাকতে হচ্ছে। পরিশেষে মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে
প্রার্থনা তিনি যাতে প্রবন্ধকারসহ সবাইকে এই মহান মনীষীর জীবন থেকে কিছু আলো সংগ্রহের
তাওফীক দেন। আমীন!!